কে ভেবেছিল “তালিবুল-‘ইল্ম”-এর সাথে একদিন যুক্ত হবে রোশনাই আর জৌলুস? কেই-বা ভেবেছিল “জ্ঞানের ছাত্র” হওয়া একসময় পরিণত হবে বহু মুসলিমের ধ্যানজ্ঞানে? নিজেকে পরিচিত করার নতুন ফ্যাশন হবে আমি একজন “দা‘ঈ”? এক হয়ে যাবে জাহিলিয়্যাহ যুগের “নাচিয়ে” আর ইসলামি “জ্ঞানের ছাত্র”?
শুরুর আগে বড় করে দাবিত্যাগ করে নিচ্ছি: জ্ঞান অন্বেষণ, অন্বেষণকারী কিংবা এমন কোনো বিষয়ের সমালোচনা নয় এই লেখাটি। বরং অধুনা মুসলিম সমাজে উচ্চাকাঙ্ক্ষী যেসব শিক্ষার্থীরা রয়েছে, জ্ঞান অন্বেষণের পেছনে তাদের মূল প্রণোদোনা এবং কীভাবে তারা সেই জ্ঞান অন্বেষণ করছে সেগুলোই এই লেখার মূল বিষয়।
মুসলিম হয়েও পশ্চিমা সমাজে যখন আপনি ইসলামবিহীনভাবে বড় হয়ে ওঠেন, তখন এমন কিছু লোককে আপনি অনুকরণ করেন আপনাকে নিয়ে যাদের কোনো মাথাব্যাথাই নেই। অথচ তাদের অনুকরণে আপনি গ্যাংস্টারদের মতো পোশাক-আশাক পড়তেন, কানে ইয়ারফোন গুঁজে সারাদিন র্যাপ মিউজিক শুনতেন, গলির মোড়ে বন্ধুদের সাথে এক হয়ে মশকরা করতেন মেয়েদের নিয়ে। এরপর বাসায় যেয়ে কোরমা-পোলাও খেয়ে রাত জেগে নিতেন পরীক্ষার প্রস্তুতি। কমবেশি এভাবেই পারিপার্শ্বিক পরিবেশের প্রভাবে আমাদের বেড়ে ওঠা।
আসলে মানুষ সেলিব্রেটিদের মতো হতে চায়: যাদের মানুষ সমাদর করে, বাহ বাহ করে। যারা বিখ্যাত তাদের অনুকরণ করতে চায়। আমার মনে হয় টাকা-পয়সার চেয়ে মানুষ তাকে কী মনে করবে এটাই তাকে মূল প্রেরণা দেয়। তাই প্রতিটা লোকই চায় মানুষ তাকে সম্মান করুক, তার প্রতি মনোযোগ দিক।
উম্মাহ্র মধ্যে কারা মুসলিম সমাজের মনোযোগ কাড়ছে ইসলামি শিক্ষার্থীরা তাদের দৃষ্টান্ত দেখে। এদের লেকচার সিডি-ডিভিডিতে পাওয়া যায়। তারা বিভিন্ন স্থানে লেকচার দেন, ক্লাস নেন; লোকে তাদের সমাদর করে।
মনে আছে একবার এক কনভেনশনে গিয়েছিলাম। কনসার্টে প্রিয় কোনো শিল্পীর আগমনের পূর্বে সবাই যেমন হাপিত্যেশ করে, সেই কনভেনশনে এক স্পিকারের কথা শোনার জন্য মানুষগুলো যেন সেভাবেই উন্মুখ হয়ে ছিল।
মুসলিমরা যখন তাদের জাহিলিয়্যাহ কালের কিছু চাওয়া-পাওয়াকে বাদ দেয়, তখন তারা সেগুলোকে বদলাতে চায় “হালাল” চাওয়া-পাওয়া দিয়ে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের কাজে দ্রুত পরিবর্তন এলেও নিয়্যাহ অনেকে পেছনেই পড়ে রয়। জ্ঞান অন্বেষণের গুণ অনেক—জ্ঞানের পথের অভিযাত্রী হওয়ার জন্য ওগুলোই যথেষ্ট। তবে এই পথ চলতে যেয়েই বেরিয়ে আসে নানান কিসিমের সব চোরাফাঁদ: মনোযোগ আকর্ষণ, খ্যাতি, মানুষের সাথে তর্ক, “জ্ঞানী” হিসেবে “জানাশোনা” হওয়া, যে জিনিস শেখায় কল্যাণ নেই সেগুলো শেখা—এমন আরও কত কী। যেসব ‘আলিমরা “একই বিষয়” কথা নিয়ে বলেন, তাদের খুব সহজেই এড়িয়ে যাওয়া হয়। আর ওদিকে যে-বিষয়টি আপনি কখনো শোনেননি, সেইসব মহান বিষয় নিয়ে যারা নিজেদের জড়িত রাখেন কিংবা বিতর্কিত ইস্যুগুলোতে দৃঢ়ভাবে নিজেদের জাহির করেন তাদের প্রতি সহজেই আপনি হয়ে পড়েন মোহগ্রস্ত।
জ্ঞানী কিংবা বিদ্যার জাহাজ হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার মুলোই একজন জ্ঞান অন্বেষণকারীর নিয়্যাহ্তে গুবলেট পাকানোর জন্য যথেষ্ট।
এমনকি নারীরাও উচ্চাকাঙ্ক্ষী জ্ঞান অন্বেষণকারীদের জন্য অনেক বড় ফিতনাহ। পশ্চিমা সংস্কৃতিতে যেসব পুরুষরা সম্মানিত, নারীরা ছোটে তাদের পেছনেই। এ ধরনের মানসিকতাসম্পন্ন “ছাত্রদের” জন্য নারী বিষয়টি বেশ রুচিদায়ক; জ্ঞান অন্বেষণের পেছনে অনেক বড় “প্রেরণা”।
অনেকে মনে করেন “জ্ঞানের ছাত্র” হলে বিয়ের সম্ভাবনা তরতর করে বেড়ে যাবে: স্ত্রীর সংখ্যা ৪টির মধ্যে রাখতেই যেন হিমশিম খেতে হবে।
আর এভাবেই “জ্ঞানের ছাত্র” উপাধি ধীরে ধীরে হয়ে ওঠে শ্রদ্ধা অর্জন, মানুষের প্রশংসা অর্জন, নারী আর কিছুটা হলেও টাকা কামানোর মিশনে। এটা কি “নাচিয়ে” জীবনধারার হালাল সংস্করণ নয়? মূল চিত্রটা হয়তো এতটা বাজে নয়। অধিকাংশ ছাত্ররা (বিশেষ করে তরুণরা) বেশিরভাগ সময়ই তাদের নিজেদের নিয়্যাহ নিয়ে দোটানায় থাকে। দীনের জ্ঞান অর্জনে পথে অভিযাত্রা নিঃসন্দেহে অনেক মহান, অনেক পবিত্র। কিন্তু বড় লক্ষ্যের সাথে আসে বড় প্রতিবন্ধকতা—আর সেইসব বড় প্রতিবন্ধকতার মধ্যে প্রধান পরীক্ষা হলো আমাদের নিয়্যাহর পরীক্ষা। জাহান্নামে প্রথম যে তিন ব্যক্তিকে ফেলা হবে সে সংক্রান্ত হ়াদীস়টি আমরা সবাই জানি। এদের মধ্যে দুজন হলো ‘আলিম ও কুর’আন তিলাওয়াতকারী (আল্লাহ আমাদের জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করুক)। নিয়্যাহ ঠিক করা তাই প্রথম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। দীন শেখার নেপথ্যে আমাদের মূল লক্ষ্য পুনরায় যাচাই করে দেখতে হবে। বাস্তবসম্মত প্রত্যাশা ঠিক করে সঠিক পন্থায় পড়াশোনা করতে হবে।
জ্ঞান অন্বেষণ করতে যেয়ে আমরা ভুল পথে যাচ্ছি কি না সেটা বোঝার উপায় কী?
আল-কুর’আনে নাবী ﷺ-কে আদেশ করা হয়েছে নিজের জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য দু‘আ করতে। কিছু কিছু হ়াদীস়ে আমরা পাই তিনি কল্যাণকর জ্ঞানের জন্য দু‘আ করতেন। এমনকি কিছু কিছু হ়াদীস়ে আমরা দেখি যেসব জ্ঞান কোনো কাজের না সেগুলো থেকে তিনি আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতেন। তো উচ্চাকাঙ্ক্ষী ছাত্রদের মনোযোগ কী কল্যাণকর জ্ঞানের দিকে?
কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইসলামে অগ্রাধিকার বিবেচনা করে কাজ করতে হয়। যেমন, ‘আ’ইশাহ y বলেছেন মদ পান নিষিদ্ধ এই আদেশ যদি ইসলামে প্রথমে দেওয়া হতো তাহলে কেউ ইসলাম গ্রহণ করত না। বাদ দেওয়ার জন্য তাদের একটা ধারাবাহিক পদ্ধতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। অনুরূপভাবে দীন শেখার ক্ষেত্রে—অন্যান্য বিষয়ের ক্ষেত্রেও—প্রথমে আপনাকে মৌলিক ও প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোতে দক্ষতা অর্জন করতে হয়। এরপর এগোতে হয় জটিল বিষয়গুলোতে।
আপনি যা শিখছেন সেটা কি আপনাকে আল্লাহর কাছে নিয়ে আসছে?—ইসলামিক জ্ঞানের ক্ষেত্রে এই প্রশ্নটি একটি লিটমাস টেস্ট।
দীনের উচ্চাকাঙ্ক্ষী ছাত্রদের জন্য এটা কি মানানসই—
আক়ীদাহ, বিদ‘আহ, ‘ইল্মের উচ্চতর ও ইজতিহাদি বিষয়ে বিতর্কে জড়ানো? এসব বিষয়ে সত্যিকারের জ্ঞানের ছাত্রদের সাথে তর্ক করা? দীনের এই ছাত্রদের হয়তো সঠিক তাজওয়ীদের সাথে কুর’আনটা ঠিকমতো পড়ার বাইরে ইসলাম নিয়ে তেমন আর কোনো পড়াশোনা নেই। কিংবা জুয ‘আম্মা ছাড়া কুর’আনের আর কোনো অংশ তাদের মুখস্থ নেই। তাহলে কীভাবে তারা এসব বিষয়ে তর্কে জড়াতে পারে?
সালাহ্র আরকান যারা ঠিকমতো বলতে পারেন না, তারা যখন অন্যের সাথে সালাহ্তে কীভাবে আঙুল নাড়াবে সেই ফিক়্হ নিয়ে আলোচনা করে তখন কেমন দাঁড়ায় ব্যাপারটা?
মাওলিদ (মিলাদ) কিংবা তাওয়াস্সুল-এর মতো বিতর্কিত বিষয়গুলোর সমর্থনে ঝাঁপি খুলে বসেন, অথচ যে-‘ইবাদাহগুলো নিয়ে কোনো তর্কের অবকাশ নেই সেগুলোর দিকে মানুষকে ডাকেন না?
সুজূদে হাত আগে নাকি হাঁটু আগে এই নিয়ে দিন-মাস গবেষণা করেন অথচ তারা এটাই বলতে পারবেন না যে ওদ়ূ (ওজু) করার জন্য কী ধরনের পানি ব্যবহার করা অনুমোদিত? সে জন্য ফিক়হের ন্যূনতম মৌলিক জ্ঞানটুকুই নেই তাদের।
অন্য মুসলিমের ব্যাপারে রায় দিয়ে দেওয়া, তাকে বিদ‘আতি বলা কিংবা তার আক়ীদাহ/মানহাজ ঠিক নেই এমন দাবি করা। অথচ আমাদের এই ছাত্রটি হয়তো শির্ক ও কুফ্রের মধ্যে পারিভাষিক পার্থক্যটুকুও জানেন না।
এ ব্যাপারটাই-বা কেমন যারা ফিক়হি ইস্যুতে ওয়ালা ও বারা প্রয়োগ কোরে মোজার ওপর মাসাহকারীর পেছনে সালাহ আদায় করেন না? কিংবা যারা “বাইরের মাংস” খান তাদের বর্জন করে চলেন?
“স্টুডেন্ট অফ নলেজ কালচার” কিছু লোককে আজিব কিছু তকমার সাথে জুড়ে দিয়েছে। আপনি হয়তো মাসজিদে দেখবেন কিছু লোক আসহাবুল-হ়াদীস়ের (হ়াদীস় অনুসারী) গুণাবলি নিয়ে আলোচনা করছে। নিজেদের বলছে হ়াদীস়ের ছাত্র। তারা হয়তো অধ্যয়ন করছে হ়াদীস়ের বর্ণনাকারীদের নিয়ে উচ্চতর বিষয়ের কোনো বই—তথাপি, এরা হয়তো স়িহ়াহ সিত্তাহ (ষড় হ়াদীস় সংকলন)-এর কোনো একটি বইও প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত নিজে পড়ে শেষ করেননি। কোনো শাইখের কাছে পড়া তো দূরের কথা। কেউ কেউ দাবি করেন, তিনি প্রথাগত ইসলাম অনুসরণ করেন। অথচ যে প্রথাগত ইসলাম অনুসরণের দাবি তিনি করেন সেই ইসলামের বুনিয়াদি উস়ূল ও দালা’ইল-ই হয়তো তার পড়া হয়নি। তা সত্ত্বেও তারা নিজেদের এতটাই ধার্মিক ও জ্ঞানী মনে করেন যে, যারা তাদের পথ অনুসরণ করেন না, তাদের অবজ্ঞা করতে একটুও বাধে না।
অনেকে “জ্ঞানের ছাত্র” হতে যেয়ে দীনের মৌলিক বিষয় শেখাকে অগ্রাহ্য করে উচ্চতর ইখতিলাফি বিষয়ে বেশি আগ্রহ দেখায়। নির্দিষ্ট একটি ড্রেস-কোডের সাথে নিজেদের সংশ্লিষ্ট রাখে। ড্রেস-কোড? আপনি জানেন হয়তো। জোব্বা, সাউদিদের মতো মাথায় কুফি, হাঁটু ও গোড়ালির মাঝে পড়া প্যান্ট। কঠোরভাবেই এসব ড্রেস-কোড অনুসরণ করেন। আবার ওদিকে ‘আলিমদের বিধান ও রায় নিয়ে আলোচনা আর তর্কে মতেন। অথচ কখনো হয়তো এসব ‘আলিমদের মূল লেখা চোখেও দেখেননি। কিংবা এসব ছাত্ররা কেবল নিজেদের শিক্ষকদের শেখানো আজ়কার আওড়ান, অথচ যেগুলো সুন্নাহয় পাওয়া যায় সেগুলোতে চোখ বুলিয়েও দেখেন না।
একটা বিশাল সংখ্যক মুসলিম ছাত্র জ্ঞানের প্রথম পর্যায়ের মালভূমিতে বিচরণ করেন। তারা মনে করেন তারা সব জানেন। একটা কথা প্রায় সবারই জানা—“অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী”। জ্ঞানের উচ্চতর পর্যায়ে পৌঁছানোর নিয়্যাহ অবশ্যই মহৎ। ইসলামিক জ্ঞানের উচ্চতর বিষয়ের পিয়াস মেটাতেই মানুষের আগ্রহ বেশি, বিশেষ করে যেটা মুসলিমদের মধ্যে জনপ্রিয়। মাংসটা হালাল না হারাম এটা নিয়ে সবাই তর্ক করতে চায় কিন্তু এর জন্য যে-উস়ূল, যেসব প্রমাণাদি জানা দরকার সেগুলো কেউ অধ্যয়ন করতে চান না। সবাই কুর’আনের তাফসীর করতে চান, কিন্তু কুর’আন মুখস্থ করার সময় কারও হয় না, এমনকি প্রতিদিন আবৃত্তি করারও না।
ব্যাপারটা বেশ আশ্চর্যজনক। “দীনের ছাত্র” হিসেবে অনেক লোকই আমাদের আশেপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন অথচ দীনের বুনিয়াদি বিষয়গুলোই তারা এড়িয়ে চলেন। কুর’আনের সাথে তাদের কোনো প্রাত্যহিক সম্পর্ক নেই। এটি হ়িফ্য করার জন্য নেই কোনো সঠিক পরিকল্পনা।
দীন শিখতে যেয়ে কিছু পরিমাণে ঔদ্ধত্যও ভর করে আমাদের মাঝে। মৌলিক বিষয়াদি বাদ দিয়ে “আকর্ষণীয়” বিষয়ের পেছনে ছোটাই আমাদের মূল লক্ষ্যে পরিণত হয়। কারণ এতে করে আপনি অনেক বিষয়ে অন্যান্যদের ভুল ধরে অবজ্ঞা করতে পারবেন। আমি নিজেই যখন জানতাম কোনো একটা কাজ বিদ‘আহ এবং অন্যদের তাতে জড়াতে দেখতাম, তখন ভীষণ রেগে যেতাম। পরে যখন বিষয়টি নিয়ে কোনো শাইখের অধীনে পড়াশোনা করতাম, তখন দেখতাম বিষয়টি নিয়ে অন্যান্য প্রমাণ, অভিমত ও ব্যাখ্যা আছে। এগুলো প্রমাণ করে যে, কাজটা বিদ‘আহ নয়। নিদেনপক্ষে কাজটা এমন কিছু নয় যাতে রক্ত গরম করা উচিত। আপনি আমাদের সমাজে এমন কত লোককে দেখেন যারা এ ধরনের বিষয় নিয়ে “যুদ্ধে” লিপ্ত? এসব কথিত “বিদ‘আতি” কাজের কারণে একে অপরের ছায়া মাড়ান না? মহামারীর আকার ধারণ করার আগেই এর প্রাদুর্ভাব দূর করতে হবে। কখন কেউ এই পথ মাড়ায় তার একটা নমুনা হচ্ছে যখন দেখবেন দীনের জ্ঞান অন্বেষণে “অগ্রসর” হওয়ার পথে তারা সমাজ থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেয়। বাকি সবাইকে তারা নিচু চোখে দেখা শুরু করে। সবকিছুকে অগ্রাহ্য করতে শুরু করে, যেন সামাজিক কাজ তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না—মুখে না-বললেও তাদের কাজে এটা ঠিকই প্রকাশ পায়। আর এমন করেই দীনের জ্ঞান জীবনের ব্যপ্তির পরিসর থেকে কেবল তাত্ত্বিক জ্ঞানের মাঝে সংকীর্ণ হয়ে পড়ে।
এধরনের কার্যাবলির একটি লক্ষণ হলো শুইভিদা। শুইভিদা কী? শুধু ইন্টারনেটভিত্তিক দা‘ওয়াহ। আমাদের মধ্যে এমন অনেক লোক আছে যারা মাসজিদভিত্তিক ও সামাজিক দা‘ওয়াহ বাদ দিয়ে কেবল ইন্টারনেটে দা‘ওয়াহ কাজ করেন। আমি বলছি না যে অনলাইনে দা‘ওয়াহ হয় না, বা এ ধরনের কিছু একেবারেই নেই—এমনকি এই প্রবন্ধটিও তো একটি ব্লগেই ছাপা। কিন্তু শুইভিদা আক্রান্ত লোকেরা তাদের সারাটাক্ষণ আটকে আছেন বিভিন্ন ফোরামে, চ্যাটরুমে, আর অনলাইন মন্তব্যের জালে। এই মন্তব্য থেকে ঐ মন্তব্যে, এই চ্যাটরুম থেকে ঐ চ্যাটরুমে নিরন্তর ঘুরে বেড়ান তারা।অন্যকে তকমা দেওয়া, বর্জন করা, বারবার নতুন করে পুরোনো কাসুন্দি ঘাঁটা—এগুলোয় এখন ছেয়ে গেছে চারপাশ। সমাজ থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে, দা‘ওয়াহ কার্যক্রম পরিত্যাগ করে বেছে নিয়েছেন অন্যকে, অন্য ‘আলিমদের বিভিন্ন তকমা দিয়ে বেড়ানোর দায়িত্ব। দা‘ওয়াহর নামে খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে ঝগড়া করার দায়িত্ব। নিঃসন্দেহে এটা শয়তানের প্রবঞ্চনা। এটা এমন এক জিনিস যা হৃদয়কে কঠিন করে ফেলে। অনলাইন দা‘ওয়াহর রয়েছে ব্যাপক সম্ভাবনা; কিন্তু সেটাকে সঠিক উপায়ে কাজে লাগাতে হবে। কেউ যদি বাস্তব জীবনে দা‘ওয়াহ কার্যক্রমের সাথে যুক্ত না থাকেন, তাহলে আমি জোর দিয়েই বলব, অনলাইন দা‘ওয়াহতেও তিনি কখনো সফল হতে পারবেন না।
দীন শেখার ব্যাপারে আমাদের বাস্তবিক হওয়ার সময় এসেছে। কীভাবে জ্ঞান অন্বেষণ করতে হবে, এর পদ্ধতি, গুণাবলি এসব নিয়ে আলাদা বই-ই আছে। এই প্রবন্ধে আমরা এগুলো আলোচনা করতে যাচ্ছি না। তবে ধর্মীয় জ্ঞান অন্বেষণের ক্ষেত্রে যে-দুটো বৃহত্তর সমস্যা আমাদের মোকাবেলা করতে হয় সেগুলোর প্রতি আমি পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই:
- নিয়্যাহ
- ধৈর্য
আমরা যারা প্রকৃত অর্থে দীনের জ্ঞানী হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা পোষণ করি—শুরুতে ও বারবার—আমাদের নিয়্যাহ্কে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে যাচাই করে নিতে হবে। আমাদের দীন শেখার উদ্দেশ্য কী? অন্যের সাথে তর্ক করা? লোকের সমাদর পাওয়া? বই লিখে কিংবা লেকচার দিয়ে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা?
নাকি দীন শেখার উদ্দেশ্য সত্যিকার অর্থেই আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়া? মানুষের কল্যাণ করা? যদি এটাই আমাদের উদ্দেশ্য হয়ে থাকে তাহলে আমাদের কাজেও তার প্রতিফলন থাকতে হবে। সেটা শেখার প্রতিই আমাদের মনযোগী হতে হবে যেটা আমাদের আল্লাহর কাছাকাছি নিয়ে যায়।
যারা জ্ঞানের মোহে জ্ঞান শেখে তারা সবসময় বিধিবিধানের মধ্যে ফাঁকফোকর খুঁজে ফিরবে নিজেদের কাজকে প্রমাণ করার জন্য। যদি, উদাহরণস্বরূপ, আপনি তাকে মৌলিক বিষয়ের কথা বলেন—যেমন, কুর’আন মুখস্থ করা—তাহলে তারা খুঁজে খুঁজে এমন ‘আলিম বের করবে যিনি তাজওয়ীদ সহ বিশুদ্ধভাবে কুর’আন আবৃত্তি করতে পারেন না। হাজারো ‘আলিমদের মাঝে চিরুনি অভিযান চালিয়ে এমন একজন ‘আলিমের দৃষ্টান্ত এনে আপনার সামনে উপস্থাপন করবে যিনি কুর’আন মুখস্থ করেননি। আমাদের মধ্যে এক কদম পেছানোর সদিচ্ছা থাকতে হবে। নিজেদের পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে।
মৌলিক বিষয় রপ্ত করায় কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। কাজটা যদিও বিরক্তিকর লাগতে পারে, কিন্তু যে-বিষয়গুলোতে আমরা আগ্রহী সে-বিষয়গুলোর যথার্থ ও প্রকৃত অধ্যয়নের জন্য এটুকু ত্যাগ আমাদের করতেই হবে।
মৌলিক বিষয়গুলো রপ্ত করতে বড্ড ধৈর্যের প্রয়োজন। লক্ষ্যের ব্যাপারে আমাদের উচিত বাস্তবিক হওয়া। আমরা কি বিদ্বান হতে চাই? সেজন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলো কি আছে আমাদের? ব্যাপারটা এভাবে ভেবে দেখুন, আপনি যদি আপনার সেক্যুলার পড়াশোনায় খারাপ করতে থাকেন, ঠিকমতো ক্লাস করতে না পারেন, আপনার ফলাফল খারাপ হতে থাকে—ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনার বেলায় কেন এমন হবে না? খুব কঠিন এক সত্যের মুখোমুখি এটা আমাদের দাঁড় করিয়ে দেয়। পূর্ণকালীন ইসলামি পড়াশোনা করার জন্য ৬-৮ বছর (ন্যূনতম) সময় ও সামর্থ্য কি আছে আপনার? সেক্যুলার পড়াশোনা কিংবা চাকুরির সাথে যুগপৎভাবে পূর্ণকালীন দীনের ছাত্র হওয়া প্রায় অসম্ভব।
আপনি যদি খণ্ডকালীন পড়াশোনা করার জন্য তৈরি থাকেন, তাহলে এই সত্যের সামনে দাঁড়াতে কি আপনি প্রস্তুত যে, আপনি কোনো ‘আলিম কিংবা দীনের বড় কোনো ছাত্র হতে পারবেন না? যদি এই বাস্তবতা মেনে নেওয়া হয়, তাহলে আপনি কি তৈরি আপনার মনোযোগকে মুসলিম সমাজের একজন কল্যাণকামী সদস্য হওয়ার দিকে ফেরাতে? সেটা হতে পারে একজন ভালো খাতীব হওয়া, হালাক়াহ্য় দীন শেখানো, মানুষ যেন দীন শিখতে পারে সে জন্য নতুন নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেওয়া, মুসলিম সমাজের জন্য কাজ করা এবং উম্মাহর প্রয়োজনে অন্যান্য কাজ করা। আমাদের অনেক ‘আলিম দরকার, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু যেটা আমাদের দরকার না সেটা হচ্ছে, কেউ নিজেকে ‘আলিম মনে করে নিজেই নিজেকে ধোঁকা দেবে। এতে করে সে শুধু নিজেই লক্ষ্যচ্যুত হবে না, একই সাথে উম্মাহ্কেও কোনো সাহায্য করতে পারবে না।
যে বিষয়ে আপনার আগ্রহ সেটা নয়, বরং আপনার জন্য যেটা জানা জরুরি আপনি কি সেটার দিকে মনোযোগী হতে ইচ্ছুক? আমাদের মতো খণ্ডকালীন ছাত্ররা যে ধরনের সমস্যায় পড়ে তার একটা উদাহরণ দিই। কারও কারও হয়তো পূর্ণকালীন পড়াশোনা করার সময় নেই, কিন্তু তিনি আরবি শিখতে চান। অবশ্যই ভালো একটি লক্ষ্য। তারা আগামী ২-৩ বছর তাদের সমস্ত অবসর সময় সার্ফ, নাহ়ও, বালাগাহ ও অন্যান্য ব্যাকরণগত বিদ্যা অত্যন্ত বিস্তারিতভাবে শেখার পেছনে নিয়োগ করবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ২-৩ বছর পর তারা কেবল মৌলিক কিছু ইসলামিক বই পড়ার পর্যায়ে পৌঁছাবে যে-বইগুলো ইতোমধ্যেই মাতৃভাষায় বিদ্যমান।
আপনি কোন পর্যায়ে পৌঁছাতে চান সেটা বাস্তব পরিপ্রেক্ষিতে শনাক্ত করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। জ্ঞানী হওয়া, চর্চাকারী মুসলিম হওয়াতে কোনো সমস্যা নেই—কিন্তু সবাইকেই স্কলার হতে হবে এমন নয়। কত শত লোক ৫-৬ বছর ধরে তাদের স্বপ্নে পিছে ছোটেন। এ সময়টাতে আর কিচ্ছু করেন না। এভাবেই হয়তো তার বয়স ত্রিশ হয়ে গেছে, কিন্তু সত্যিকারের কোনো ইসলামিক শিক্ষা এখনো হয়ে ওঠেনি। এমনকি কোনো পূর্ণাঙ্গ সেক্যুলার শিক্ষাও না। “বাইরে যাবে”, “বাইরে পড়াশোনা করবে” এমন সুযোগের অপেক্ষায় থেকে বর্তমান সময়টাতে অনেকে কিছুই করেন না—এমনকি কুর’আনটাও মুখস্থ করেন না। স্থানীয় নির্ভরযোগ্য ‘আলিমের অধীনেও কোনো পড়াশোনা করেন না। এমনকি ন্যূনতম সেক্যুলার ডিগ্রির জন্য ইউনিভার্সিটিতে যাওয়াও বন্ধ করে দেন! এ ধরনের লোকেরা ৫ বছর পরও সেই একই বিষয় পড়াশোনা করেন, আলোচনা করেন, তর্ক করেন; ঠিক ৫ বছর আগেও যে বিষয়ে তারা পড়াশোনা করেছেন, আলোচনা করেছেন, তর্ক করেছেন: একুল ওকুল কোনো কুলেই কোনো চোখে পড়ার মতো অগ্রগতি নেই তাদের।
অনেকে মনে করেন, একজন ‘আলিম কিংবা দা‘ঈ হওয়ার মধ্যেই একজন দীনের ছাত্রের জীবন ঘুরপাক খেতে হবে—এমন ধারণা অমূলক। উম্মাহর লোকেরা যদি দীন শিখে নিজেরা এক একজন চর্চাকারী মুসলিম হয়ে উঠতেন তাহলে ভেবে দেখুন আজ আমাদের মুসলিম সমাজের অবস্থা কত সুন্দর হতো। ভেবে দেখুন সব ডাক্তার, আইনজীবী, শিক্ষক, ব্যবসায়ীরা চর্চাকারী মুসলিম—তারা সবাই আল্লাহর ব্যাপারে সদাসচেতন। তাদের পরিবারকে তারা তাক়ওয়ার আদলে গড়ে তুলছেন। সন্তানদের শিক্ষা দেওয়া, সম্পদ ব্যয় করা, স্বেচ্ছাশ্রম ও পারস্পারিক আচার-ব্যবহার প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা তাক়ওয়ার চর্চা করছেন। কী মুসলিম সমাজই-না হতো সেটা! কেমন হবে এমন একটা মাসজিদে প্রবেশ করলে যেখানে সবাই এমন? পুরো মুসলিম সমাজের ইসলাম চর্চা ও সামগ্রিক জ্ঞানের মাত্রা এক অন্য পর্যায়ে পৌঁছে যেত। আপনি তখন উম্মাহর লোকদের পারস্পরিক সহযোগিতায় নিয়োগ করতে পারতেন।
আমরা যখন কোনো বাস্তব লক্ষ্য ঠিক করব, তখন আমাদের সে অনুযায়ী কাজও করতে হবে। আল্লাহর কাছে দু‘আ করতে হবে: আমরা যেন শুধু জ্ঞান বহনই না করি, সে অনুযায়ী কাজও করি। যদি আমরা সেটা করতে পারি, তাহলে বছরের পর বছর যারা তাদের সময় জ্ঞান অন্বেষণের পেছনে ঢেলে দিয়েছেন এবং এখন দীন শেখাচ্ছেন সেসব তালিব আল-‘ইল্মদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আরও বেড়ে যাবে। শ্রদ্ধা বাড়বে আমাদের স্থানীয় ইমামদের ওপর, যাদেরকে প্রায়ই অবজ্ঞা করা হয়, খাটো করে দেখা হয়।
আমরা যা শিখছি সেটা যেন আমাদের হৃদয়কে সযতনে গড়ে তোলে। তাহলে পরে আমাদের যদি প্রশ্ন করা হয় কী শিখেছি, কেন শিখেছি, আমরা তখন সঠিকভাবে তার উত্তর দিতে পারব।
একটা বই পড়ার আগে, একটা লেকচার শোনার আগে আমাদের জিজ্ঞেস করা উচিত কেন আমরা সেটা পড়ছি বা দেখছি। কাজটা শেষ হওয়ার পর আমাদের জিজ্ঞেস করা উচিত এ থেকে আমরা কী শিখলাম যেটা আমাদের আখিরাতের জন্য কল্যাণকর হবে? এ থেকে আমরা কী শিখলাম যেটা আমরা অন্যদের কাছে পৌঁছাতে পারব? যেটা দিয়ে আমরা অপরের কল্যাণ করতে পারব?
দীনের ব্যাপারে আমরা আরও অধিক জ্ঞানী হতে চাই, কিন্তু তার আগে আমাদের নিজেদের কাছে সৎ হতে হবে। আল্লাহর প্রতি আমাদের আন্তরিকতা কতটুকু সে ব্যাপারে সত্যিকার অর্থে পুনরায় যাচাই করে দেখতে হবে। যদি সত্যিই আমরা আমাদের জ্ঞান দিয়ে আমরা সফল হতে চাই তাহলে এ কাজগুলো আমাদের করতেই হবে।
সুফ্য়ান আস়-স়াওরী অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা কথা বলেছিলেন,
“আমরা আল্লাহ বাদে অন্য কারণে জ্ঞান শেখা শুরু করেছিলাম, কিন্তু আল্লাহ ছাড়া আর কারও উদ্দেশ্যে যে জ্ঞান শেখা হয় না!”
আমাদের অনেকেই নানা উদ্দেশ্য নিয়ে জ্ঞান শেখা শুরু করে। যাত্রাপথে আমাদের সেই উদ্দেশ্যের রূপবদল হয়। আমাদের প্রচেষ্টা যদি অব্যাহত রাখি, তাহলে ইনশা’আল্লাহ, নিয়্যাহ বিশুদ্ধ করার জন্য ও জ্ঞানের প্রকৃত বাহক হওয়ার জন্য আল্লাহ আমাদের তাওফীক় দেবেনই।
আশা করি প্রবন্ধটা কেউ ভুল বুঝবেন না। এবং আশা করি, কেউ এই প্রবন্ধ পড়ে জ্ঞান অন্বেষণে আশাহত হবেন না—এটা এই প্রবন্ধের উদ্দেশ্য ছিল না। জ্ঞান অন্বেষণের ক্ষেত্রে আমাদের কর্মপদ্ধতি কেমন হওয়া উচিত, সঠিক কর্মপন্থা ও বিশুদ্ধ নিয়্যাহ অনুযায়ী আমরা সেটা করছি কি না সে ব্যাপারে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্যই এই লেখা। জীবনের যে পর্যায়েই আমরা থাকি না কেন, এমনকি বুড়ো বয়সেও আমরা আমাদের জ্ঞানের পথের অভিযাত্রা শুরু করতে পারি। কিন্তু সেই পথ চলতে যেয়ে সঠিক আদাব বজায় রাখার জন্য আমাদের সর্বোচ্চ আত্মনিয়োগ করতে হবে, সচেষ্ট হতে হবে।
আলহ়ামদু লিল্লাহ, ইসলাম শেখার জন্য আজ অনেক বাতায়ন উন্মোচিত। অনলাইন প্রোগ্রাম, রেডিও-টেলিভিশনের মাধ্যমে দূরশিক্ষণ প্রোগ্রাম, সপ্তাহ শেষে সেমিনার, হালাকাহ—কত সুযোগ আমাদের সামনে, শুধু লুফে নেওয়ার ব্যাপার। একইসাথে সেগুলোর সম্ভাব্য সর্বোত্তম ব্যবহার করা উচিত যাতে করে আমরা এমন আরও বিষয় শিখতে পারি যেগুলো আমাদের আল্লাহর কাছাকাছি নিয়ে যাবে।
শেষ করছি সবাইকে এই বইটি পড়ার অনুরোধ: সালমান আল-‘আওদাহ্র “The Pitfalls in the Quest of Knowledge” (বইটার বাংলা অনুবাদ আছে এই লিংকে) আমি যে কথাগুলো এখানে বলতে চেয়েছিলাম সে কথাগুলোই আরও সুন্দরভাবে শায়্খ এই বইটিতে তুলে ধরেছেন। আক্ষেপ এই প্রবন্ধটা লেখার আগে যদি বইটা হাতে পেতাম!
মূল: ইব্ন উমার
আল্লাহ আপনাকে উ্ত্তম প্রতিদান দিক। আপনার জ্ঞানকে আরও বাড়িয়ে দিক। আমিন।
জাযাকাল্লাহ খাইর
না না, অনুবাদ আলহামদুলিল্লাহ ভালোই হয়েছে। আমার কাছে আমল করাকে কঠিন মনে হয়েছে। আল্লাহই তাওফীকদাতা,আমার জন্য দো'আ করবেন।
বিষয়বস্তু কঠিন লেগেছে, নাকি অনুবাদ?
খুবই কঠিন লেগেছে,তথাপি আল্লাহ আমল করার তাওফীক দিন। জাযাকাল্লাহু খাইরা।
গুরুত্তপূর্ন বিষয়, সুন্দর অনুবাদ।
অতিরিক্ত বাহবা ব্লগের ওয়েবমাষ্টারকে লিখার স্থানে রিডিং ফ্রেন্ডলি কালার এর টেমপ্লেট ব্যাবহার করার জন্য।